• শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪২৮
চরাঞ্চলে হাঁস পালনে স্বাবলম্বী রায়হান

পটুয়াখালীর চরাঞ্চলে হাঁস পালন করে শত শত লোক এখন স্বাবলম্বী

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

চরাঞ্চলে হাঁস পালনে স্বাবলম্বী রায়হান

  • প্রকাশিত ১০ অক্টোবর ২০১৮

জোবায়ের হোসেন, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)

বেকার যুবক রায়হান সিকদার। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার কাউখালী গ্রামের কৃষক খালেক সিকদারের ছেলে। অভাবের তাড়নায় ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পাশের গ্রামের এক হাঁস খামারির পরামর্শে সামান্য পুঁজি নিয়ে হাঁস পালন শুরু করেন। দুই বছর হাঁস পালন করেই ধারদেনা পরিশোধে সক্ষম হন। সেই অভাবী রায়হান হাঁস পালন করে এখন স্বাবলম্বী হওয়ার অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। সম্প্রতি রায়হানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, হাঁস পালনে সচ্ছলতার চিত্র। তার সংসার থেকে অভাব দূর হয়েছে। তার এ সফলতা দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক-যুবতী হাঁস পালন শুরু করেছেন। রায়হানের মতো পটুয়াখালীর চরাঞ্চলে হাঁস পালন করে শত শত লোক এখন স্বাবলম্বী। রায়হান সিকদার জানান, চরগুলোতে থাকা উচ্ছিষ্ট, বোরো ধান ও শামুক খেয়ে হাঁসগুলো বড় হয়ে ডিম দেয়। আলাদা খাদ্য দিতে হয় না। এ কারণে বাচ্চা কেনা ছাড়া হাঁস পালনে খরচ তেমন নেই বললেই চলে। তাতে কৃষক বেশ লাভবান হয়। যারা হাঁসের খামার গড়েন, তারা চৈত্র-বৈশাখ মাসেই নতুন বাচ্চা সংগ্রহ করেন। সাধারণত ৫শ’ থেকে এক হাজার হাঁস নিয়ে একটি খামার গড়ে ওঠে। এক হাজার হাঁস থাকলে প্রতিদিন ডিম পাওয়া যায় ৭শ’ থেকে ৮শ’। প্রতিটি হাঁস বছরে ২শ’ থেকে ৩শ’ ডিম দেয়। এভাবে দুই বছর ডিম দেওয়ার পর সব হাঁস বিক্রি করে দেওয়া হয়। একটি ডিম ১০ টাকায় বিক্রি হয়। একটি খামারে ৫শ’ হাঁস থাকলে একজন খামারির মাসে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়। পরে সেটি মাংস হিসেবে বিক্রি হয়। ১শ’ হাঁস প্রায় ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া খুচরাও ৩শ’ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করা হয়। হাঁস বিক্রি থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা আয় হয়।

পটুয়াখালীর চরাঞ্চলের অধিকাংশ লোকজন কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। বছরে চার মাস থাকে কৃষিকাজ। আর আট মাস বেকার থাকতে হয়। একটি মাত্র ফসল আমন ধানের ওপর তারা নির্ভরশীল। জানা গেছে, কয়েক বছর আগে এই চরাঞ্চলে হাঁসের খামার গড়ে তোলা হয়। সফলতা পাওয়ায় এলাকা জুড়ে প্রতিযোগিতামূলক হাঁসের খামার গড়ে তোলা হয়। ফলে শত শত বেকার লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বিকল্প পেশা হিসেবে এখন হাঁসের খামার গড়ার দিকে নজর দিচ্ছেন এখানকার মানুষ। সচেতন মহল মনে করছে, সরকারের প্রাণিসমপদ বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা পেলে এ হাঁসের খামার জাতীয় অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখবে।

পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মলয় কুমার শূর জানান, গোটা চরাঞ্চলে এভাবে খামার স্থাপন করে হাঁস পালন করা হলে পটুয়াখালীর বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে দরিদ্রতা দূর করা সম্ভব হবে। আমরা হাঁস পালনকারীদের সার্বিক সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দানের উদ্যোগ নিয়েছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads